১৮১৬ এবং ১৮১৯ সালের স্থানীয়ভাবে ফেরী ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ, সড়ক/ সেতু নির্মাণ ও মেরামতের জন্য বৃটিশসরকার কর্তৃক কর ধার্যের আইন প্রনীত হয়। ১৮৭০ সালে বেঙ্গল চৌকিদারী আইন প্রণয়ন করে।
১৮৭০ সালে গ্রাম চৌকিদারী আইন পাশের মাধ্যমে পল্লী অঞ্চলে এক স্তর বিশিষ্ট স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়।
১৮১৭ সালে তৎকালীন বৃটিশ লেজিসলেটিভ কাউন্সিলে জিলা বোর্ড সে কমিটি বিল উথাপিত হয় এবং ঐ বছরেই তা আইনে পরিণত হয়। এ আইনের অধীন প্রতিটি জেলায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এর নেতৃত্বে জেলা বোর্ড সে কমিটি গঠিত হয়। এ কমিটির এক তৃতীয়াংশ সদস্য ছিলেন সরকারী কর্মচারী এবং দুই তৃতীয়াংশ কর্মচারী ছিলেন বেসরকারী। বেসরকারীর সদস্যরাও সরকার কর্তৃক মনোনীত হতেন। এ কমিটির প্রধান কাজ ছিল করের হার নির্ধারণ, কর আদায় এবং রাস্তাঘাট নির্মাণ ও প্রয়োজনীয় মেরামত কাজে অর্থ ব্যয় করা। ১৮৭১ সাল হতে ১৮৮৫ সাল পযর্ন্ত এ কমিটির অস্তিত্ব ছিলো। স্থানীয় সরকার গঠনের এটিই ছিলো প্রাথমিক পদক্ষেপ।
স্থানীয় সরকার গঠনের প্রাথমিক ভিত্তি হিসেবে জিলা বোর্ড সেস কমিটি দীর্ঘ ১৪ বছর এর অস্তিত্ব বজায় রাখলেও এ কমিটি সামগ্রিক ভাবে জনগণের আস্থা অর্জণ করতে পারেনি। সে কমিটির অভিজ্ঞতার আলোকে ১৮৮৫ সালে লোকাল সেলফ্ গভর্মেন্ট এ্যাক্ট প্রণীত হয়। স্থানীয় সরকার গঠনে এই এ্যাক্ট উপমহাদেশের অবদান রাখে।
১৮৮৫ সালে লোকাল সেলফ্ গভর্মেন্ট এ্যাক্ট বলে তৎকালীন বাংলার ১৬ টি জেলায় বিভিন্ন ডিস্ট্রিক্ট বোর্ড গঠিত হয়। ১৬ টি ডিস্ট্রিক্ট বোর্ড ছিলো : ঢাকা, চব্বিশ পরগনা, নদীয়া, মুর্শিদাবাদ, যশোর, খুলনা, হুগলী, হাওড়া, বর্ধমান, মেদিনীপুর, ঝকুরা, বীরভূম, ফরিদপুর, পাবনা ও পাটনা। লোকাল সেলফ গভর্মেন্ট এ্যাক্ট বলে প্রত্যেক জেলার প্রত্যেক মহকুমায় লোকাল বোর্ড গঠিত হয়। এ লোকাল বোর্ড ই ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের নিবার্চক মন্ডলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করত। ১৮৮৬ সালের প্রতিষ্ঠাকাল হতে ১৯২০ সালের মার্চ মাস পযর্ন্ত ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিষ্ট্রেটের পদাধিকার বলে ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হতেন। ১৯৩৬ সনে লোকাল সেলফ গভর্মেন্ট এর সংশোধিত আইনে লোকাল বোর্ডের বিলুপ্তি ঘটে। পরবর্তী পর্যায়ে নিবার্চিত চেয়ারম্যান নিযুক্তির মাধ্যমে ডিস্ট্রিক্ট বোর্ড জনপ্রতিনিধিত্বশীল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপলাভ করে এবং এ ধারা ১৯৫৭ সন পযর্ন্ত বলবৎ থাকে।
১৯৫৯ সনে মৌলিক গণতন্ত্র আদেশের অধীন ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডকে নতুন আঙ্গিকে পরিণত করে ডিন্ট্রিক্ট কাউন্সিল নামকরন করা হয়। এ ব্যবস্থায় ১৯৬৩ সালে জেলা পরিষদের প্রথম নিবার্চন হয়। দ্বিতীয় এবং সর্বশেষ ১৯৬৬ সনে নিবার্চন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর স্বাধীনতা পরবর্তী কালে ১৯৭২ সলে নিবাচিত পরিষদ ভেঙ্গে দিয়ে অন্তবর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে জেলা প্রশাসককে এর প্রশাসক করে ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলের যাবতীয় কর্যাবলীর পরিচালনা ও তত্ত্বাবধানের ক্ষমতা অর্পন করা হয় এবং ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলের স্থলে জেলা বোর্ড নামকরন করা হয়। ১৯৭৬ সনে স্থানীয় সরকার অধ্যাদেশ জারী করা হয় এবং জেলা বোর্ডের নামকরন করা হয় জেলা পরিষদ।
স্থানীয় সরকার (জেলা পরিষদ) আইন, ১৯৮৮ এর ধারা ৪ (১) অনুযায়ী প্রতিনিধি সদস্য, মনোনীত সদস্য, মহিলা সদস্য এবং কর্মকর্তা সদস্যগণের সমন্বয়ে জেলা পরিষদ গঠন করা হয়। জেলা পরিষদ আইন, ২০০০ এ পরোক্ষ নিবার্চন পদ্ধতিতে ১ জন চেয়ারম্যান, ১৫ জন সদস্য এবং সংরক্ষিত আসনের ৫ জন মহিলা সদস্য সমন্বয়ে পরিষদ গঠনের বিধান রাখা হয়েছে।
জেলা পরিষদ আইনে উপ-সচিব পদমর্যাদার একজন প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা এবং সিনিয়র সহকারী সচিব পদমর্যাদার একজন সচিব প্রেষণে পরিষদে ন্যস্ত রাখার বিধান আছে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস