অদ্য ০৭-০১-২০১৮ তারিখে জেলা প্রশাসন, নাটোর-এর উদ্যোগে ও র্যাব-৫ এর সহায়তায় নাটোর জেলার লালপুর ও বড়াইগ্রাম এলাকায় ভেজাল গুড়বিরোধী মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। এসময় কয়েকটি কারখানা পাওয়া যায় যেখানে খেজুরের রস ছাড়াই খেজুরের গুড় উৎপাদন করা হয় !!! আটক করা হলে এসব কারখানার মালিকগণ অকপটে নিজের অপরাধ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। জানা যায়, চিটাগুড়ের সাথে চিনি এবং প্রয়োজনমত কাপড়ের রঙ ও হাইড্রোজ মিশিয়ে এই গুড় তৈরি করা হয়। বর্তমানে ক্রেতাগণ কিছুটা সচেতন হওয়ায় হালকা রঙের গুড় কিনতে চাননা, ত াই একজন ব্যবসায়ী কাল রঙ মেশান বলে জানান! এতে গুঁড়ের রঙ কালচে ও কুশ্রী হয়ে গেলেও নাকি অতি চালাক ক্রেতাগণ আসল গুড় ভেবে এগুলো কিনে থাকেন ! আরও জানা যায়, প্রতি ৫০ কেজি চিনি থেকে প্রায় ৫৫ কেজি গুড় পাওয়া যায় এবং প্রতি কেজি চিনির বাজার দর যেখানে ৫০ টাকা সেখানে প্রতি কেজি গুড়ের দাম ৭০ টাকা! এছাড়াও এখানে দেখা যায় ফিটকিরি ও চুনের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার। এসময় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ এর বিভিন্ন ধারায় ৩ টি পৃথক কারখানায় ৩ টি মামলায় ৩ জনের কাছ থেকে ৮৫ হাজার টাকা আদায় করা হয় এবং একজনকে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও ১ লক্ষ টাকা জরিমানা, জরিমানা অনাদায়ে আরও ২ মাসের কারাদন্ড প্রদান করা হয়, সমস্ত ভেজাল গুড়, হাইড্রোজ, কাপড়ের রঙ, চিটাগুড় জনসম্মুখে ধ্বংস করা হয়।
এছাড়া লালপুরের ওয়ালিয়ায় একটি বেকারীতে অভিযান চালিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যসামগ্রী উৎপাদিত হতে দেখা যায়। পোড়া কাল তেলে বুট ভাজতে ও অনেকদিনের পুরনো চিনির সিরা ব্যবহৃত হতে দেখা যায়। এছাড়া বিশাল এই বেকারীর উৎপাদিত কোন পণ্যের মোড়কে খাদ্যসামগ্রীর মুল্য, উৎপাদনের তারিখ ও মেয়াদ এসব কিছুই লেখা ছিল না। এখানে বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ অনুসারে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করেন।
সবগুলি মামলা পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসন, নাটোর-এর নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট জনাব নাজমুল আলম। এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যজিস্ট্রেট, নাটোর , র্যাব-৫ কমান্ডার, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রিনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ এবং স্থানীয় জনগণ। জেলা ম্যজিস্ট্রেট, নাটোর, জনাব শাহিনা খাতুন সার্বিক বিষয়াদি সমন্বয় করেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন।