কালিসাস রায়, নাটোর ॥ রানী ভবানী, বিখ্যাত কাঁচাগোল্লা, কবি জীবনানন্দ দাসের বনলতার শহর নাটোর। উত্তরবঙ্গের ছোট্ট এই শহর ঐতিহাসিকভাবেই বিখ্যাত। সতের শতকে উত্তরা গণভবনের রাজপ্রাসাদ পরবর্তীতে পূর্ব-পাকিস্তানের গবর্ণর হাউজে এবং স্বাধীনতার পরে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয় বাসভবন হিসেবে স্বীকৃতি পায়। কিন্তু যথাযথ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের অভাবে দীর্ঘদিন অবহেলিত থেকে গেছে উত্তরবঙ্গের গুরুত্বপূর্ন এই জেলা। কিন্ত নাটোর বাসীর দাবি অনুযায়ী নাটোরকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুনের উদ্যেগে নাটোরের ঐতিহাসিক উত্তরা গণভবনকেন্দ্রিক নানা উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পাল্টে গেছে ফেলা হয়েছে এর চিত্র। এরমধ্যে উত্তরাগণভবনের ৮০ভাগ স্থান দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্তকরণ, পুরাকীর্তি সংগ্রহশালা, মিনি চিড়িয়াখানা নির্মান, পরিস্কার পরিছন্নতা অভিযান, বৃক্ষরোপনসহ বেশ কিছু উদ্যেগ নাটোরবাসীর মধ্যে উন্নয়নের আশার সঞ্চার করেছে। আর একের পর এক উন্নয়ন ও সম্ভাবনাময় কাজের আইডল হিসেবে ইতোমধ্যেই নাটোরবাসীর মন জয় করে নিয়েছেন জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন।
জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন জানান, নাটোর একটি সম্পদশালী, সুন্দর ও অনেক সম্ভাবনাময় একটি জায়গা। এখানে সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে অনেক উন্নয়ন করা যেতে পারে। তবে প্রাথমিকভাবে উত্তরা গণভবনকেন্দ্রিক নানা উন্নয়ন পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী পরিষদ সদস্য মোহাম্মদ শফিউল আলম নাটোরে আসার পরে তার কাছে উত্তরা গণভবনের ভেতরে ও বাহিরে নানা অবকাঠামোগত উন্নয়ন পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছে। যদি প্রকল্প পাওয়া যায় তবে নাটোরের পর্যটন শিল্পে যুগান্তকারী উন্নয়ন সাধিত হবে। পাল্টে যাবে নাটোরের চিত্র। বহুগুনে বেড়ে যাবে দর্শনার্থীদের সংখ্যা। বাড়বে রাজস্ব আয়। জেলা প্রশাসন কর্তক প্রস্তাবিত উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য বিপুল অংকের অর্থের প্রয়োজন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, নাটোরের উত্তরা গণভবনের ঐতিহাসিক স্থাপনা ও নিদর্শন হলেও দীর্ঘদিন থেকে অবহেলিত হয়ে পড়েছিল। এর সামগ্রিক উন্নয়ন ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের কথা স্থানীয় প্রতিনিধি থেকে শুরু করে কোন পর্যায়ের কেউই সেভাবে ভাবেননি। কিন্তু চাকুরী সূত্রে এখানে বদলি হয়ে আসার পরেই বনলতার শহর, রানী ভবানীর শহর নাটোরের প্রেমে পড়ে যান জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন। তিনি সম্পদশালী ও সম্ভাবনাময় এই জেলাকে আরো ঢেলে সাজানোর বিভিন্ন উদ্যেগ গ্রহন নেন। তিনি বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করে অপার সৌন্দর্যের অধিকারী ঐতিহাসিক উত্তরা গণভবনকেন্দ্রিক অবকাঠামোগত উন্নয়নে পদক্ষেপ নেন। এতে সাড়া মেলে। জেলা প্রশাসন উদ্যেগে এবং জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুনের একান্ত প্রচেষ্টা ও পরিশ্রমের ফলে পাল্টে গেছে উত্তরা গনভবনের চিত্র। জেলা প্রশাসক নিজে স্কাউটদের সাথে নিয়ে গণভবনের ভিতর বাহির পরিস্কার পরিছন্নতা অভিযানে নামেন। উত্তরা গণভবনের সর্বত্র পরিস্কার পরিছন্ন করা হয়েছে। প্রায় ৪৪ একর আয়তনের এই রাজবাড়ির আঙিনায় শতাধিক শতবর্ষী আমগাছ রয়েছে। লাগানো হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির মূল্যবান গাছ ও ফুলগাছ। বসানো হয়েছে মিনি চিড়িয়াখানা। নতুন বসানো চিড়িয়াখানায় এখন শোভা ছড়াচ্ছে হরিণ, ময়ুর, বানর, টিয়া। প্রথম অবস্থায় দুটি হরিনের নাম দেওয়া হয়েছে শ্যামা ও শ্যামল, ময়ূর দুটি নাম রাখা হয়েছে তিথি ও মিথি, বানর দুইটি যার নাম করণ করা হয়েছে মিঠু ও মন্টি। সুত্রঃ দৈনিক জনকণ্ঠ
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস